পাগলি এবং খুশি!
রুমি’কে অনেকেই মামা তথা মামালু বলে ডাকে। রুমি হঠাত করেই তার ফেসবুক ওয়ালে একটা স্ট্যাটাস দিলো,-
পাগলিটা জেনে গেছে যে সে একটা পুরো উপন্যাসের নায়িকা, এবং খুশি তার নাম! তাই আজকে মামালু’র মনটা ভালো।
পোস্ট দেবার সাথে সাথেই একজন জিজ্ঞেস করে বসলো,-
কে সেই পাগলি?
এরপর পর্যায়ক্রমে শুরু হলো একই অর্থের শতশত কমেন্ট! রুমি কয়েকটা কমেন্টে লাইক রিয়েকশন দিয়ে বারান্দার শেষ প্রান্তে গিয়ে চেয়ারা বসে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে চোখ বন্ধ করে ভাবছে,-
পাগলিটা আসলে কে?
সকাল ৭টা। বান্ধবীদের সাথে ইস্কুলে যাচ্ছে মম। ক্লাস নাইনে পড়ে। রুমি মুনিরকে সাথে নিয়ে পেছন পেছন যাচ্ছে। রুমি কলেজ পাশ করেছে। এখন আক্ষরিক অর্থে পড়াশুনার চাপ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দেখা যাবে।
কয়েকদিনেই মম বুঝে গেছে যে হ্যাংলা মতোন ছেলেটা তার পিছু নিয়েছে। বিরক্তি নিয়েই মম পেছনে ফিরে তাকিয়েছি বারবার। ভুলটা কি সেটাই ছিলো?
আজ একাই ইস্কুলে যাচ্ছে মম। সাথে কোনো বান্ধবী নেই। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। মম আজ ছাতা মাথায়। মাঝে মাঝে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখছে যে শ্যামলা হ্যাংলা ছেলেটা আজ আর তার পেছনে পেছনে নেই। মম বুঝতে পারছে না তার মন খারাপ লাগছে কিনা। তবে তার মন দেখতে চাইছে ছেলেটাকে। কিন্তু দেখা পেলো না। মম ইস্কুলে ঢুকে গেছে। আর আর ওর মন বসছে না। ক্লাসরুমের জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখছে আর ভাবছে, – ইস্কুল ছুটি হলে আজ ভিজতে ভিজতে বাসায় ফিরবে। আজ সময় পার হচ্ছে না মম’র। প্রতিটা ক্লাস দীর্ঘ মনে হচ্ছে তার কাছে…
বেলা ১২টা। ছুটির ঘন্টা বেজে গেছে। বাইরে তখন মুসলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। ভিজে বাসায় ফিরবার কথা মাথা থেকে উড়ে যায়। ছাতা মাথায় দিয়েই ইস্কুল থেকে বের হয় মম।
হাঠাত ইস্কুলের গেটের অদুরেই টং দোকানের ছাউনিতে সিগারেট হাতে দাঁড়িয়ে ছেলেটা। আজ ওকে একাই দেখা যাচ্ছে। সাথের বন্ধুটি নেই। সিগারেট হাতে ছেলেটাকে আজ অন্যরকম লাগছে মম’র কাছে। কি মনে করে মম আবার ইস্কুলের ভেতর ঢুকে যায়।